সতেজ খাদ্যপণ্যের নিশ্চয়তা দিয়ে টাটকা ব্র্যান্ড নামে ২০০৯ সালে যাত্রা করে এএইচজেড এগ্রো ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড। চার বছরের মাথায় বন্ধ হয়ে যায় প্রতিষ্ঠানটি। এতে আটকে গেছে বিভিন্ন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের প্রায় ২৫০ কোটি টাকা। বেকার হয়ে পড়েছেন প্রায় ১ হাজার ২০০ কর্মী।
প্রতিষ্ঠানটির কর্ণধার সাখাওয়াত হোসেন। রাজধানীতে ইংরেজি মাধ্যমের অন্যতম প্রতিষ্ঠান অক্সফোর্ড ইন্টারন্যাশনাল স্কুলেরও কর্ণধার তিনি।
সতেজ খাদ্যপণ্যের নিশ্চয়তা দিয়ে টাটকা ব্র্যান্ড নামে ২০০৯ সালে যাত্রা করে এএইচজেড এগ্রো ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড। চার বছরের মাথায় বন্ধ হয়ে যায় প্রতিষ্ঠানটি। এতে আটকে গেছে বিভিন্ন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের প্রায় ২৫০ কোটি টাকা। বেকার হয়ে পড়েছেন প্রায় ১ হাজার ২০০ কর্মী।
প্রতিষ্ঠানটির কর্ণধার সাখাওয়াত হোসেন। রাজধানীতে ইংরেজি মাধ্যমের অন্যতম প্রতিষ্ঠান অক্সফোর্ড ইন্টারন্যাশনাল স্কুলেরও কর্ণধার তিনি।
ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, খাদ্যপণ্য ব্যবসায় প্রবেশের পর প্রতিষ্ঠান চালাতে উচ্চ বেতনে অন্য প্রতিষ্ঠান থেকে কর্মকর্তা নিয়ে আসেন সাখাওয়াত হোসেন। তাতেও কাজ হয়নি। ২০১৩ সালে বন্ধ হয়ে যায় এএইচজেড এগ্রো ইন্ডাস্ট্রিজ। ফলে ব্যাংকঋণও আর পরিশোধ করা সম্ভব হয়নি।
এ বিষয়ে সাখাওয়াত হোসেনের মন্তব্য জানতে গতকাল অক্সফোর্ড স্কুলে গিয়েও তাকে পাওয়া যায়নি। তার ব্যক্তিগত সহকারী জানান, ‘স্যার নেই, এ বিষয়ে তিনি কথাও বলবেন না।’
ধানমন্ডির অক্সফোর্ড ইন্টারন্যাশনাল স্কুলে গিয়ে দেখা যায়, স্কুলের বেজমেন্টের গ্যারেজে ছোট আকারের দুটি কক্ষে এএইচজেড এগ্রোর কার্যালয়। পুরনো চেয়ার-টেবিল, পণ্যের প্রচারপত্র, কিছু পণ্য দিয়ে ঠাসাঠাসি কক্ষ দুটি। কর্মকর্তাদের ছাঁটাই করে বর্তমানে সবকিছু দেখাশোনা করছেন হাসেনুজ্জামান।
নিজেকে প্রতিষ্ঠানটির প্রধান সমন্বয়কারী পরিচয় দিয়ে হাসেনুজ্জামান বলেন, ‘হল-মার্ক কেলেঙ্কারির কারণে সোনালী ব্যাংক ঋণ অনুমোদনের পরও তা দেয়নি। ফলে ২০১৩ সালে প্রতিষ্ঠানটি বন্ধ করে দিতে হয়। এতে অন্যান্য ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের দেনাও শোধ করা যাচ্ছে না। মালিক চাইছেন দ্রুত ঋণ শোধ করে আবার প্রতিষ্ঠানটি চালু করতে। ঋণের খোঁজও করছেন তিনি।’
জানা গেছে, ২০০৯ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি রূপালী ব্যাংক এএইচজেড এগ্রো ইন্ডাস্ট্রিজের অনুকূলে ১২ কোটি টাকার ঋণ অনুমোদন করে। এর মধ্যে ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংকের ঋণ রয়েছে সাড়ে ৫ কোটি, পূবালী ব্যাংকের দেড় কোটি ও প্রাইম ব্যাংকের ২ কোটি টাকা। এসব ঋণ দিয়ে প্রতিষ্ঠানটি গাজীপুরের নয়াপাড়ায় কারখানা স্থাপন করে এবং উৎপাদনে যায়। টাটকা ব্র্যান্ডের চকোলেট, চানাচুর, ডাল ভাজা, পটেটো চিপস, ম্যাংগো বার, মুড়ি ভাজা, তেঁতুল ও জলপাই চাটনিসহ বিভিন্ন খাদ্যপণ্য বাজারজাত শুরু করে। কয়েকটি দেশে পণ্য রফতানিও করে প্রতিষ্ঠানটি। সারা দেশে ৪০০ ডিলার ও ১ হাজার ২০০ কর্মী নিয়ে প্রতিষ্ঠানটি চললেও ব্যাংকের ঋণ পরিশোধ করেনি।
ব্যাংকগুলো থেকে পাওয়া সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, প্রতিষ্ঠানটির কাছে রূপালী ব্যাংকের ঋণ দাঁড়িয়েছে ১৬৮ কোটি টাকা; এরই মধ্যে যা ক্ষতিজনক মানে খেলাপি হয়ে গেছে। পাশাপাশি যমুনা ব্যাংকের ২০ কোটি ও ইউনিয়ন ক্যাপিটালের ১০ কোটি টাকাও খেলাপি হয়ে পড়েছে। এর বাইরে আরো কয়েকটি ব্যাংকের ৫০ কোটি টাকার ঋণও খেলাপি হয়ে গেছে।
ব্যাংক কর্মকর্তারা বলছেন, রূপালী ব্যাংকের বাইরে বেশ কয়েকটি ব্যাংক থেকে ছোট অঙ্কের স্বল্পমেয়াদি ঋণ নেয় এএইচজেড এগ্রো ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড, যা একসময় বড় অঙ্ক ধারণ করে। ওই ঋণ আর পরে পরিশোধ করা হয়নি।
রূপালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম ফরিদ উদ্দিন এ প্রসঙ্গে বলেন, বারবার তাগাদা দেয়া হয়েছে ঋণ পরিশোধের। তার পরও কোনো অগ্রগতি হয়নি। অর্থ আদায়ে আইনি ব্যবস্থা নেয়া ছাড়া বিকল্প নেই।
উল্লেখ্য, রূপালী ব্যাংক শীর্ষ ঋণখেলাপিদের যে তালিকা করেছে, তাতে স্থান করে নিয়েছে এএইচজেড এগ্রো ইন্ডাস্ট্রিজ।
অক্সফোর্ড স্কুল ও এএইচজেড এগ্রোর বাইরে সহযোগী প্রতিষ্ঠানগুলো হলো এএইচজেড বায়োটেক সিড, এএইচজেড ওয়েলফেয়ার ফাউন্ডেশন, টাটকা এগ্রো, এএইচজেড কোল্ড স্টোরেজ, টাটকা বাস্কেট, এএইচজেড ট্রেড অর্গানাইজেশন ও ডিউলি ব্রিকস।
Discussion about this post