ছাঁটাই হওয়া কয়েকজন ব্যাংকার জানান, বেঁধে দেওয়া লক্ষ্য পূরণ করতে না পারলে পদত্যাগে বাধ্য করা হয়। আবার সিনিয়র পদে নতুন কেউ যোগ দিলেও পুরোনোদের ছাঁটাই করে নতুন লোকবল নেওয়া হয়। স্বেচ্ছায় পদত্যাগ না করলে বরখাস্ত বা ছাঁটাই করা হয়। যে কারণে আর্থিক সুবিধা পাওয়া যায় না, অন্য ব্যাংকে যোগদানের সুযোগও থাকে না। তাই সবাই স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করতে বাধ্য হন।
বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিদর্শনে উঠে এসেছে, ২০২০ সালের ১ জানুয়ারি থেকে এ বছরের ৯ আগস্ট পর্যন্ত বেসরকারি ওই ছয় ব্যাংকের ৩ হাজার ৩১৩ জন কর্মকর্তা চাকরি ছেড়েছেন। এর মধ্যে ‘স্বেচ্ছায়’ পদত্যাগ করেছেন ৩ হাজার ৭০ জন। আর ১২ কর্মকর্তাকে ছাঁটাই, ২০১ কর্মকর্তাকে অপসারণ ও ৩০ কর্মকর্তাকে বরখাস্ত করা হয়েছে।
‘স্বেচ্ছায়’ পদত্যাগ করা কিছু কর্মকর্তা কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পরিদর্শন কর্মকর্তাদের জানান, তাঁদের পদত্যাগে বাধ্য করা হয়েছে। আর ছাঁটাই, অপসারণ ও বরখাস্ত করা কর্মকর্তাদের নথিপত্র যাচাইয়েদেখা গেছে, শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের ক্ষেত্রে যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করো হয়নি। কারণ দর্শানো নোটিশ বা আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দেওয়া হয়নি।
* ক্যানসার আক্রান্ত কর্মকর্তাকেও পদত্যাগে বাধ্য করা হয়েছে। * কেন্দ্রীয় ব্যাংক শিগগিরই নির্দেশনা দেবে, যাতে যৌক্তিক কারণ ছাড়া কাউকে ব্যাংক ছাড়তে না হয়।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পরিদর্শন প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ব্যাংকিং খাতে স্থিতিশীলতা, শৃঙ্খলা ও জবাবদিহি আনতে ও ব্যাংক খাতকে কর্মিবান্ধব করতে ব্যাংক কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ব্যাংকগুলোর এমন আচরণ বন্ধে একটি নির্দেশনা জারি করা সময়ের দাবি।
স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংকের এমডি খন্দকার রাশেদ মাকসুদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমাদের এখান থেকে যাঁরা চাকরি ছেড়েছেন, তাঁদের বেশির ভাগ নতুন কর্মী। তাঁরা কেউ অন্য ব্যাংকে বা অন্য চাকরিতে চলে গেছেন। কয়েকজনকে শাস্তি দেওয়া হয়েছে যৌক্তিক কারণে।’
গত বছরের অক্টোবরে প্রাইম ব্যাংক এক ক্যানসার আক্রান্ত কর্মকর্তাকেও পদত্যাগে বাধ্য করে, যিনি ব্যাংকটির একটি বিভাগের প্রধান ছিলেন। এ নিয়ে তিনি গভর্নরের কাছে লিখিত অভিযোগে করেছেন। বিষয়টি ওই সময়ে ব্যাংককর্মীদের মধ্যে সাড়া ফেলেছিল।
Discussion about this post