বড় অনেক প্রকল্প ও সড়কের নির্মাণকাজ চলার কারণে এসব ক্রয়াদেশ আসছে। পাশাপাশি বেসরকারি নির্মাণ প্রতিষ্ঠানও এসব যন্ত্র কিনছে।
সাদিদ জামিল, ব্যবস্থাপনা পরিচালক, মেটাল মোটরস
বিশ্বে নির্মাণ যন্ত্রের বাজারের বড় অংশই আমেরিকার ক্যাটারপিলারের। বাংলাদেশে ২০০৪ থেকে আমেরিকার ক্যাটারপিলার যন্ত্রের একক পরিবেশক বাংলা ক্যাট। বিশ্ববাজারে তৃতীয় অবস্থান চীনের এক্সসিএমজির, বাংলাদেশে যার পরিবেশক আর্থ মুভিং সলিউশন। চতুর্থ অবস্থানে থাকা চীনের সানি আনছে বাংলাদেশের পাওয়ার ভিশন। এনার্জিপ্যাক আনছে ভারতের জেসিবির যন্ত্র, রানার আনছে দক্ষিণ কোরিয়ার হুন্দাইয়ের যন্ত্র।
গত কয়েক বছরে এই ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে এসিআই মোটরস ও মেটাল মোটরস। মেটাল আনছে ভারতের ইসকোর্টের যন্ত্র। এ বিষয়ে মেটালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সাদিদ জামিল প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা এখন পর্যন্ত প্রায় ১০০ কোটি টাকার যন্ত্র সরবরাহের আদেশ পেয়েছি। আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান থেকে আমরা এসব কার্যাদেশ পেয়েছি। বড় অনেক প্রকল্প ও সড়কের নির্মাণকাজ চলার কারণে এসব ক্রয়াদেশ আসছে। পাশাপাশি বেসরকারি নির্মাণ প্রতিষ্ঠানও এসব যন্ত্র কিনছে।’
জানা যায়, গ্রাহকেরা নিজে আনলে এসব যন্ত্র আনলে ১ শতাংশ আমদানি কর দিতে হয়। আর প্রতিষ্ঠানগুলো বিক্রির জন্য আনলে ৫ শতাংশ আমদানি কর দিতে হয়। বড় প্রতিষ্ঠানগুলো এসব পরিবেশকের সহায়তায় যন্ত্র আমদানি করে। এক্ষেত্রে দেশীয় পরিবেশকেরা কমিশন পেয়ে থাকে।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, দেশে বর্তমানে একসঙ্গে অনেকগুলো বড় প্রকল্পের নির্মাণকাজ চলছে। এসব প্রকল্পের মধ্যে অন্যতম হলো কয়েকটি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল ও বিদ্যুৎকেন্দ্র, পদ্মা সেতু, মেট্রোরেল, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র, কর্ণফুলী টানেল, মহেশখালী গভীর সমুদ্রবন্দর, ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনাল নির্মাণ প্রকল্প। পাশাপাশি যোগাযোগব্যবস্থার উন্নয়নে আগের চেয়ে বেশি সড়ক ও রেলপথ নির্মাণ এবং সংস্কারের কাজ চলছে। পাশাপাশি বেসরকারি খাতের দেশি–বিদেশি উদ্যোক্তারাও বড় কারখানা গড়ে তুলছে। আবার আবাসন খাতের প্রতিষ্ঠানগুলোর নির্মাণকাজেও এখন ভারী যন্ত্রের ব্যবহার বাড়ছে।
দেশের বাজারে ভারী যন্ত্রের সবচেয়ে বড় বিক্রেতা প্রতিষ্ঠান বাংলা ক্যাট। প্রতিষ্ঠানটির যন্ত্র বিক্রয় বিভাগের প্রধান শাখাওয়াত হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ‘দিনে দিনে দেশীয় ঠিকাদার ও নির্মাণপ্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে সচেতনতা গড়ে উঠছে। তবে দাম কম হওয়ায় এখনো পুরোনো যন্ত্রের প্রতিই ক্রেতাদের আগ্রহ বেশি।’
খাতসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, এসব যন্ত্রের চলাচলের জন্য চাকা বা ক্রেন থাকলেও পরিবহনের মতো এসব যন্ত্রের জন্য আলাদা নিবন্ধন নিতে হয় না। তাই এসব যন্ত্র কেনার ক্ষেত্রে ঋণ বা লিজ সুবিধা নেই। সরকার যদি ভারী যন্ত্রপাতি নিবন্ধনের আওতায় আনে, তাহলে সরকারের রাজস্ব আয় হবে। আবার দুর্ঘটনার ক্ষেত্রে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ারও সুযোগ তৈরি হতো। এ ছাড়া নিবন্ধনপ্রক্রিয়া চালু হলে এসব যন্ত্র কেনার ক্ষেত্রে ঋণসুবিধাও মিলত। তাই বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ) এসবের নিবন্ধন চালু করতে পারে।
Discussion about this post